গরুর রচনা - Benami Diary

Saturday, December 29, 2018

গরুর রচনা

আজ বেশ কীছুদিন পর মামাবাড়ী এসে একটা বেশ বড় কনফিউশানে পড়ে গেছি। মানে কেশটা হল এক বিশাল সাইজের হলস্টাইন গাই কে একটু পেয়ারার ডালা খাওয়াতে গেলুম তো গরু কেমন তেড়ে এল। কীছু বুঝতে পারলুম না। তবে কেমন যেন নিজেকে ব্যার্থ মনে হল। তারপর আরও একবার চেস্টা করতে গেলাম তো ডালাটা শুঁকেই যে ভঙ্গিটা করল সেটা দেখে বুঝলাম যে জাস্ট গার দড়িখানি আর একহাত লম্বা হলে আমার মধ্যপ্রদেশে একখান মারিয়ানা খাত তৈরি হতে পারত।
****----------****
গরু সবদিনই আমাদের জন্য একটি অর্থকরী ফসল। পুরোনো দিনের সবকটি সম্ভ্রান্ত পরিবারেই একাধিক গরু থাকত। আর বলদ যেমন জমিতে লাঙল টেনে,  গাড়ী টেনে যেমনভাবে বাইরের বিষয়গুলি সামলাত, তেমনই গাই গরু ঘরের ভেতরের কাজ যেমন দুধ দিয়ে মানুষকে সন্তান স্নেহে লালন করেছে। আর বোধহয় ঠিক সেই কারনেই পুরাকাল থেকেই বাড়ীতে গরুর একটা আলাদা স্থান ছিল, অন্যান্য পশুর তুলনায়।আর কোনও জাতি বা ধর্মের আবির্ভাবের আগে থেকেই বোধহয় গরুর এই উপকারীতা বুঝতে পেরে তাকে এক আলাদা আসনে বসানো হয়।
****------------****
পৃথিবীতে বোধহয় এমন কোনও জাতি নেই যারা যে বস্তু থেকে সূযোগ সুবিধা পাবে সেই প্রানীকেই আবার ভক্ষন করবে। আবার এও দেখা যায় যে অঞ্চলভেদে  যেহেতু বিভিন্ন  প্রানীর অবদান বিভিন্ন জাতির কাছে
ভিন্ন তাই তাদের স্থানও ভিন্ন। যেমন শীত প্রধান দেশের সান্টার বাহন কীন্তু বলগা হরিনই, আমাদের ঘোড়া নয়। তেমনই গঙ্গা সিন্ধুর বিশাল এই সমভূমি অঞ্চলে কী চাষের কাজ বা কী গৃহগত প্রয়োজন, সবকীছুতেই গরুর অবদান সবচেয়ে বেশী, তাই বোধহয় এই অঞ্চলের মানুষের কাছে গরু মাতৃষমা যে কীনা দুধ দিয়ে সন্তানস্নেহে মানুষকে বাড়তে সাহায্য করে।
****------------****
যে কোনও ধর্মেই সেই অঞ্চলের মানুষের পাশাপাশি থাকা জন্তু জানোয়ারদের একটা বিশেষ স্থান রয়েছে। তাই হিন্দু ধর্মেও গরু তার ব্যাতিক্রম নয়।আর কোনও অর্থকরী বস্তু থেকে লাভ পাওয়ার পর যখন সে র কর্মক্ষম থাকেনা, তার যত্ন নেওয়া আমাদের অবশ্য কর্তব্য।আমরা যে তা মোটেই করতে ইচ্ছুক নই তা বহু বছর পুর্বেই বুঝেছিলেন বৈদিক ঋষিরা।তাই তাঁরাও বোধহয় ধর্মগ্রন্থে গরুকে একটা আলাদা জায়গা দিয়েছেন (তখন তো তাঁরা বোঝেননি যে তাঁদেরকেও রাজনীতিতে আনতে দ্বিধা করবেননা, তাঁদের তথাকথিত শিষ্যরা)। আর কালে কালে সেই নির্দেশই গরুকে একটি বিশেষ ধর্মীয় আচারে পরিনত করেছে। গরুর গোবর কীটনাশক তাই বাড়ীতে গোবর দিয়ে লাতা দেওয়া হয়, গরুর দুধ পুস্টি বর্ধক, বলদ লাঙল করে জমিতে ফসল ফলায়, তাই এরম একটি প্রানীকে অকারনে ভক্ষন করে যাতে একটি জাতি উচ্ছন্নে না যায় তার জন্য যা করা সঠিক তাই করেছেন তাঁরা।আর আজকের রাজনীতিকরা তাঁদের সুবিধার জন্য গরুকে মা বানিয়ে ফেলছেন আর তার জন্য মানুষ খুন করতেও পিছপা হচ্ছেন না।
****----------****
ও হ্যাঁ গল্পের গরুকে গাছে তুলে দিলাম। যেটা বলছিলাম গরুটাকে দেখে বড্ড কনফিউশানে পড়লাম। কারন পাশে দাঁড়ান দেশী গরু দুটো বেশ সুন্দর গাছের পাতাও খাচ্চে আবার গলায় হাতও বুলোতে দিচ্ছে। এখন আমাদের এক বিখ্যাত রাজনৈতিক নেতা তথা একটি রাজ্যের B.Sc. পাশ করা ও গনহারে নাম পরিবর্তনকারী মুখ্যমন্ত্রী গরুকে মা বলেন, আবার নিজেকে দেশপ্রেমিক ও বলেন।তো প্রশ্ন হল যে শুধু কী দেশী গরুই তাঁদের মা?  তাহলে যে সব গরু বাইরে জন্মালো তাদের দোষ কী?  আবার অন্যদিকে বিশেষ চিন্তা যে যদি বিদেশী গরুও তাদের মা হয় তাহলে তাঁরা কতটা দেশপ্রেমিক,  মানে যার শরীরে কীছুটা বিদেশী রক্ত তিনি কীভাবে দেশপ্রেমিক হবেন। আর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন যে মুলতানী গরু যা কীনা পাপিস্তানের তিনিও কী এদের মা?  নাকী তিনি অচ্ছুত?  সত্যি বলছি এসব নিয়ে কনফিউজড হয়ে যখন মামার সাথে আলোচনা করতে গেলাম তো মামাও বললেন- "তোর কী কোনও কাজ নেই গরু? "
মানে কনফিউজান কাটার বদলে আরও বেড়ে গেল, আমাকে কী অপমান করলেন(? ) নাকী ভগবান বললেন  

4 comments:

  1. এবার তো আমিও confusion এ পরে গেলাম

    ReplyDelete
  2. Ha ha...Main vi confused ho gaya..🐂🐮🐃🐄🐑🐐,😂

    ReplyDelete
  3. Ganga pata dile hoito kheye nito..tui o jemon!goruo kintu goru noi j peyara pata khabe

    ReplyDelete