নার্স - Benami Diary

Thursday, March 26, 2020

নার্স

আমি আপনি বেশ ছুটি কাটাচ্ছি। হে হে পড়ে পাওয়া তিন হপ্তার ছুটি বলে কথা। আমরাও বেশ করেই কাটাতে পারতাম। কিন্তু কিছু পশ্চাদপক্ক পরিবারের লোকের সৌজন্যে কাটাতে পারলাম না।আর ভাই মেয়ে হয়েছে, বেশ ঠিক আছে। হালকা করে পড়াও, কলেজে পাঠাও পাস করলে ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দিয়ে দাও। ব্যাস। গল্প শেষ। কিন্তু তা নয় মেয়েকে ভালো স্কুলে পড়াবো। সে পর্যন্তও মেনে নেওয়া গেছিল পড়িয়েছ। এবার স্কুল পেরোল, কলেজে ভর্তি করো আর ছেলে দেখো। বিয়েও তো দিতে হবে নাকি! সেসব ছেড়ে মেয়েকে পাঠালে নার্সিং পড়তে। পড়াশুনো করে মেয়ে আমার বিদ্বান হলো। দিয়ে? দিয়ে আর কি এখন রাত জাগো। হাসপাতালে মেয়ে বসে ডিউটি করছে আর ঘরের লোকের চিন্তার শেষ নেই। কোথায় এই ছুটিতে সকালে চায়ে চুমুক দিয়ে বসে বসে পেপার পড়বে। দুপুরে ঘরে ভাত ঘুম দেবে, পাড়ার লোকজনদের নিজের বিজ্ঞ বিজ্ঞ জ্ঞান দেবে। আর সন্ধ্যা হলে নিউজ চ্যানেল খুলে বউকে বলবে "আরেক কাপ চা দিয়ে যাও তো"। তা নয় মেয়ে এখন রাত বিরেতে জেগে করুণাময়ী হয়ে করোনার চিকিৎসায় ব্যস্ত আর ঘরের লোকেরা সালা চিন্তায় ব্যস্ত। দুপুরের আলুপোস্ত ভাতটাও বিস্বাদ লাগে, কারন মেয়েটা চাল ডাল সেদ্ধ করে গিলে নিচ্ছে। লকডাউনে পৃথিবীর সব স্কুল মাস্টার, আইটি প্রফেশনাল, বিজ্ঞবি* প্রাইভেট মাস্টার আর সবজান্তা গামছাওয়ালারা বসে ছুটি কাটাচ্ছে, উল্টোদিকে একমাত্র মেয়েটা সালা রাতবিরেতে জেগে জেগে হাসপাতালে পাবলিকের গাল শুনছে। আর ওর এই কাজের জন্য পৃথিবীর সব নার্সের চরিত্র খারাপ, ওরা ডাক্তারদের সাথে শুয়ে যায় যখন তখন এসবও বলতে পারছনা। এমনকি হাসপাতালে কারোর কিছু হলে শালা নার্স গুলোরই সব দোষ এটাও বলতে পারছনা। তাও তো আবার হাসপাতালে ঘর দিয়েছে থাকার, নইলে তো ভাড়ার ঘর থেকেও দূর করত পাবলিক।  হুম আবারও বলছি কত করে বললাম ওসব না করে বেসিক পড়িয়ে বিয়ে দিয়ে দিতে। কথা না শুনলে ওমনি ই হয়। 😏

©Avi Nandan

No comments:

Post a Comment