Benami Diary

Thursday, August 20, 2020

ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের একটা সই আর আমি আপনি

August 20, 2020 1
ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের একটা সই আর আমি আপনি

 


সরকারি অফিসে কোনো কাজে গিয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়নি এমন বাঙালি বোধহয় খুব কমই আছেন। ডিএম এসডিও এনাদের দরজার বাইরে তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করতে হয়নি এরম মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। একটা ছোট্ট কাগজে তাঁদের একটা নাম স্বাক্ষর এবং তার নিচের সিলমোহর পাওয়ার পর নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতেই পারেন। কারন ওই টুকু পাওয়ার জন্য আপনি আমি দিনের পর দিন দরজার বাইরে অপেক্ষা করেছি। কিন্তু কোনোদিন ভেবে দেখেছেন আমাদের কেন এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়? কোনোদিন নিজেকে অসম্মানিত মনে হয়নি? সত্যি করে বলুন মনে হয়নি? আমি বলছি না হয়নি। কারন ওনারা ব্যস্ত মানুষ, তাই আমাদের অপেক্ষা করা এবং ফিরে যাওয়াটা স্বাভাবিক। কেরানির পুত্র হওয়ার কারনে সরকারি অফিসের নাড়ি নক্ষত্রটা অন্যান্য আমার বয়সী ছেলে মেয়েদের চেয়ে একটু আগেই বুঝেছি আমি।আমার মতেও একদিনে এই সরকারি কাজ হওয়ার নয় আর আমাদের ভবিতব্য এই বাইরে দাঁড়িয়ে থাকাটা। কিন্তু এর শুরুটা কোথায়?


ভারত একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশ। অন্তত কাগজে কলমে তাই। আর এখানে সাধারণ মানুষই কাগজে কলমে সমস্ত ক্ষমতার অধিকারী। কিন্তু তবুও আমরা কতটা অসহায় সেটা কোনোদিন সরকারি অফিসের সামনে গিয়ে একবার দাঁড়ালেই বোঝা যায়। শুধু যে অফিসের বড় বাবুরা নিজেদের বড়ো মনে করেন তাই নয়, আমরা নিজেরাও মনে করি। সেই কারনেই অফিসের বাইরে তীর্থের কাকের মতো তাকিয়ে থাকি কৃপা দৃষ্টির আশায়। কিন্তু কাগজে কলমে এটা তো হওয়ার নয়, কিন্তু হচ্ছে। এই ব্যাপারটা একটু তলিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে কারণটা ঠিক কি। আচ্ছা কোনোদিন ভেবে দেখেছেন ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের বাংলা কি? আক্ষরিক অর্থ কিন্তু দাঁড়ায় জেলা অধিকারনিক। নাহ এটা আপনি জানতেন না সেটা আমিও জানি, আর জানলে আপনি এই বাংলার হাতে গোনা কয়েকজনের একজন। ম্যাজিস্ট্রেটের একটা পাতি বাংলা হয় শাসক। সেই হিসেবে জেলা শাসক। কিন্তু এই স্বাধীন দেশে জেলার সর্বোচ্চ আধিকারিক শাসক কেন হবেন সেটা কোনো রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মানুষ থাকলে এই অধমকে একটু বুঝিয়ে দেবেন।তাও না হয় অলংকারিক অর্থে ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট বাংলায় জেলা শাসক হলেন। কিন্তু কোন ডিকশনারির হিসেবে একজন সাব ডিভিশনাল অফিসার বাংলায় মহকুমা শাসক হিসেবে পরিচিত হন তা আমার জ্ঞানের পরিধির বাইরে। Officer শব্দটির অর্থ আমি যতদূর জানি আধিকারিক বা উক্ত অফিসের পদাধিকারী। কিন্তু না, আমরা আজন্ম শোষিত জাতি, IAS দের শাসক না বলে যাবো কোথায়? নাম বদলে যতই সরকার ICS কে IAS করুক, পদাধিকারী ব্যক্তি যে সমান ক্ষমতার অধিকারী তা কি আর বুঝতে বাকি বাঙালির নাকি? তাই উনারা শাসক আর আমরা শাসিত। ও হ্যাঁ এই হিসেবে তো Block Development Officer সমষ্টি শাসক নামে পরিচিত হতে পারতেন, কিন্তু সম্ভবত ব্রিটিশরা এই পদ তৈরি করেননি তাই জনগনের ভাগ্য ভালো এই অফিসাররা অন্তত শাসক হতে পারেননি। সুভাষচন্দ্র যতই ম্যাজিস্ট্রেটদের ঘোল খাওয়ান আর ক্ষুদিরাম বসু, প্রদ্যোতকুমার ভট্টাচার্যরা ব্রিটিশ ম্যাজিস্ট্রেটদের মেরে স্বর্গের রাস্তা দেখান, আমরা বাঙালিরা তো তাঁদের শাসক বলেই মানব। তাহলে তাঁদের অফিসের সামনে গিয়ে ব্রিটিশ আর ভারতীয় এই দুই জাতির পার্থক্য সহ্য করবনা বললেই হল নাকি?


এতো গেল জেলা মহকুমা স্তর। এনারা শাসক আর আমরা শাসিত (পড়ুন শোষিত) তাই না হয় এঁদের অফিসে একটু ডিস্ক্রিমিনেশন সহ্য করে নিলাম। কিন্তু বাকি অফিসগুলোর সামনেও তো অবস্থাটা কমবেশি একই থাকে। সেটা কেন হয়? সেটারও একটা ব্যাখ্যা দেব, ধৈর্য ধরুন। কোনোদিন ওই অফিস গুলোতে অফিসের পিয়ন বা ক্লার্করা ওই অফিসের পদাধিকারীদের কি নামে ডাকেন সেটা শুনেছেন? হ্যাঁ উনারা ওই পদাধিকারীদের সাহেব বলেই ডাকেন। আর এই সংস্কৃতিও ব্রিটিশদেরই দান। ব্রিটিশ আমলে ওই বড় পদে ব্রিটিশ বসতেন এবং তাদের সাহেব বলে অভিহিত করা হত, তাই স্বাধীনতার এতো বছর পর একজন নেটিভ ওই পদে বসলেও তাঁদের আমরা সাহেব বলেই ডাকব। কেউ আটকাতে পারবেনা আমাদের। দুইশত বছরের পরাধীনতায় আমাদের আমাদের রক্তে এই বিষয়গুলো এমনভাবে ঢুকে গেছে যে উঁচু পদে বসা মানুষ মানেই আমাদের কাছে সাহেব। এবং সেই সংস্কৃতি মেনেই আমরা তাঁদের কাছে সেই ব্যবহারটাই পাই যেটা সাহেবরা আমাদের সাথে করতেন। এমন বহু পদ যা স্বাধীনতার পর সৃষ্টি হয়েছে সেঈশ্ব পদাধীকারীও সাহেব নামে অভিহিত হন। সব ক্ষেত্রেই ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে কিন্তু সেটা অতি কম।


এ তো নাহয় সাহেব শাসক গেল। কিন্তু আমরা আমাদের পরিবর্তন করতে পেরেছি, যে ওই চেয়ারে বসা লোকগুলো করবে? এখনো একজন জনপ্রতিনিধিকে আমরা স্যার বলে ডাক। কেন ডাকব? তিনি আমার প্রতিনিধি, প্রয়োজনে তিনি আমাকে স্যার বলবেন। কিন্তু না, আমরা বলি। আজও কোনো উচ্চপদে একজন আদিবাসী অফিসারকে দেখলে আমাদের চোখ টেরা হয়ে যায়। বিশেষ করে আদিবাসী অফিসার বা কর্মীদের পদবী ধরে ডাকাটা প্রায় নিয়মের মতো। এবং একজন আদিবাসী সে যত বড়ই হোক আমি বাঙালি কোনোদিন তাঁকে কোটার মাল ছাড়া কিস্যু বলতে পারেনি। আবার হয়ত কোনো মহিলা ওই উঁচু পদে রয়েছেন তখন আমরা সাহেবের পরিবর্তে ম্যাডাম বলি। কিন্তু আমি কোনো সাধারণ মানুষকে কোনো উচ্চপদে আসীন মহিলাকে ম্যাডাম স্যার বলে সম্ভাষণ করতে শুনিনি। এখানেও সেই মহিলাকে বারেবারে বুঝিয়ে দেওয়া হয় যে যিনি যত বড়ো পদেই যান, তিনি মহিলাই।


দুশ বছরের ব্রিটিশ শাসন কিছু দিক বা না দিক আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বশ্যতার বীজ বপন করে দিয়ে গেছে। অতি অশিক্ষিত মানুষও Yes Sir, No Sir, Sorry Sir  এই তিনটি শব্দবন্ধ আওড়াতে পারেন। আর সেই সুবাদেই আমরাও আমাদের মননে সেই পরাধীনতার শিকলে আবদ্ধ থেকেই এই সব অফিসারদের সাহেব ভেবে চলি।গোটা বাংলায় আপনি স্বাধীন ভারতীয় হলেও কোনো পুরোনো সরকারি অফিসে গেলেই সেই পরাধীন ভারতের স্বাদ পাবেন। ব্রিটিশ আর্কিটেকচার আর ব্রিটিশ ব্যবহার। দরজার বাইরে বসে ভারতীয় পিয়ন যে আরেক ভারতীয়র সামনে নিজেকে বিশাল বড় ভাবে, কারন সে সকল বিকেল ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবকে চা জল দেয়। ব্রিটিশ তো কবেই ভারত ছেড়ে চলে গেছে, কিন্তু আমরা আমাদের মননে সেই ব্রিটিশ সাহেবদের রেখে দিয়েছি। অফিসের সামনে যতই ইউনিয়ন জ্যাকের বদলে ভারতীয় পতাকা উড়ুক, ঘরের ভেতর কিন্তু সাহেব বসে।


প্রসঙ্গত- বাংলার বাইরে বহু রাজ্যে ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের সমতুল্য পদাধিকারীরা ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর বা ডেপুটি কমিশনার নামে পরিচিত।যার বাংলা করলে দাঁড়ায় জেলা সমাহর্তা বা উপাধ্যক্ষ।

Tuesday, July 14, 2020

বাঙালির রক্ষাকর্তা নাকি রাজনৈতিক অভিসন্ধি?

July 14, 2020 0
বাঙালির রক্ষাকর্তা নাকি রাজনৈতিক অভিসন্ধি?

বাংলা আগামীদিনে মহারাষ্ট্র হতে চলেছে। হ্যাঁ রক্তক্ষয়ী মহারাষ্ট্র। এর কারণ দুটো। এক সরকারের বাংলার মানুষকে ছেড়ে অন্যান্য প্রদেশের মানুষকে তোল্লাই দেওয়া। আর দ্বিতীয় কারন প্রধান বিরোধী দলের (সে আপনি মানুন আর নাই মানুন অনারাই এখন প্রধান বিরোধী দল) অত্যধিক গো বলয় নির্ভর রাজনীতি। আর এর ফাঁক গলে বাংলার বাঙালি সেন্টিমেন্টে হাত বুলিয়ে কয়েকটি ভুঁইফোড় স্বঘোষিত বাঙালির দায়িত্ব রক্ষাকারী গোষ্ঠীর আগমন। এবং এর সাথেই একের সাথে আরেক গোষ্ঠীর পাল্লা দিয়ে অবাঙালি হেনস্থা করা। শুধু অবাঙালিই নয় বাঙালি কেউও যদি নিজেদের আত্মসমালোচনা করে  তাকেও এই সামাজিক মাধ্যমে বা তার বাইরে ওর বাড়ির কাছে গিয়ে হেনস্থা করা। এই ধরনের উগ্র রাজনীতি আমরা মহারাষ্ট্রে দেখে অভ্যস্ত। মারাঠা অস্মিতা নিয়ে সেখানে কার্যত অমারাঠি জাতি গোষ্ঠীর ওপর আক্রমণ করা হয়। তা আজ আমাদের বাংলায়। কিন্তু এর কারণটা ঠিক কি? একটু তলিয়ে দেখলে দেখা যাবে কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয় সরকারের বেশ কিছু পদক্ষেপ।

 প্রথমেই আসি কেন্দ্রের সরকারের কথায়। বলে নেই কওয়া নেই হঠাৎ আসানসোল, খড়গপুর, নিউ জলপাইগুড়ির মতো স্টেশনগুলো থেকে বাংলা হটিয়ে একদম হিন্দিতে সব লেখা শুরু হল। এমনিতেই এই তালিকার দুটো শহরে বাঙালিরাই কার্যত সংখ্যালঘু এবং একরকম ইনসিকিওরটিতে ভোগে। তার ওপর এই ধরনের কাজকর্ম আরও বেশি করে তাদের ক্ষোভ বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও রেল ব্যাংক ইত্যাদি সংস্থায় কাজ করতে আসা বেশিরভাগ বাইরের রাজ্যের কর্মী বাংলা পড়তে পারা তো দূর অস্ত, বলতেই পারেননা ঠিক ঠাক। উল্টে সর্বদাই একরকম আমরা উচ্চশ্রেণীর মার্কা ভাব দেখানো। ফলে মানুষের ক্ষোভ প্রচন্ড বেড়ে যায় এইসব নিয়ে। আমার নিজের গ্রামে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের একাধিক কর্মচারী না ব্যাংক বোঝেন না বলতে পারেন ঠিক ঠাক। আর এই গন্ডগ্রামের অধিকাংশ মানুষের কাছে হিন্দি আর স্প্যানিশ সমতুল্য ভাষা। ফলে পরিষেবার চেয়ে হেনস্থা বেশি হতে হয় সেটা বলাই বাহুল্য। আর যারা জানেন তাদেরও নিজের রাজ্যে বসে একজন বাইরের রাজ্যের মানুষের সাথে তাঁর ভাষায় কথা বলতে হচ্ছে। অথচ আপনি মায় বিহার ঝাড়খন্ড যান, সেখানেও কিন্তু আপনাকে হিন্দিতেই কথা বলতে হয়। এখানে আবার টুরিস্ট স্পটের কথা বলবেন না যেন। ফলে বাঙালির ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হওয়া স্বাভাবিক। আবার রেলের অধিকাংশ বিজ্ঞাপন, বা তথ্য পুস্তিকা সবই হিন্দি না হয় বাংলায়। ফলে বাংলায় বসে বাংলায় পরিষেবা পাইনা আমরা

এবার ধরুন রাজ্যের কথা। রাজ্য সরকার অবাধে বিহারীদের বাংলায় আসতে এবং থাকতে দিচ্ছে। হ্যাঁ এই দেশে যে কেউ যেকোনো জায়গায় গিয়ে থাকতে বা ব্যবসা করতে পারেন। কেউ আপনাকে আটকাতে পারেনা। কিন্তু সেইসব মানুষ যখন আশেপাশের বাঙালির ওপর জুলুমবাজি করবে, তখন সেটা কে সহ্য করবে বলুন? হাওড়া স্টেশনে বা বড়বাজারে কুলিদের জুলুমবাজি, বাসে কন্ডাক্টরের জুলুমবাজি আরও কত বলব? এছাড়াও সঙ্গে বাংলায় বসে বাঙালিকে অপমান তো ফ্রিতে। এগুলো সরকার আটকাতেই পারে। কলকাতায় ফুটপাতে ব্যবসা করা প্রতি পাঁচজনে তিনজন বাংলার বাইরের মানুষ পাবেন, তাদের সরকার আটকাতে পারে? সিভিল সার্ভিসে বাঙালির চেয়ে অবাঙালির সংখ্যা বেশি। বাঙালিকে নিজের এলাকায় পরিষেবা নেওয়ার জন্য অনু ভাষায় কথা বলতে হয় তারই ট্যাক্সের তাকে বেতন পাওয়া লোকের সঙ্গে। একমাত্র বাংলাই একটি রাজ্য যেখানে বাংলা না জানলেও চাকরি পাওয়া যায়। ছট পুজোয় রবীন্দ্র সরোবর বা পাড়ার পুকুর নোংরা করার অলিখিত লাইসেন্স রয়েছে বিহারীদের কাছে। বাংলার মন্ত্রিসভায় এমন মন্ত্রীও হয়েছেন যাঁরা বাংলাটাই ঠিক করে বলতে পারেন না। এগুলো সরকার চাইলেই আটকাতে পারে। বাংলায়, নন বেঙ্গলি স্টাফের জন্য বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। এগুলো আটকাতেই পারে সরকার। কিন্তু না আটকানোর ফকে বাঙালির পুঞ্জীভূত ক্ষোভ আজ ভুঁইফোড় সংগঠনগুলির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে।

তাহলে যদি বাঙালির ক্ষোভ থাকে তাহলে তো বিকল্প সংগঠন তৈরি হবেই। কিন্তু এইসব সংগঠনগুলি এক একটি আস্ত ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন। বাংলার বহুদিনের একটা অতিথিয়েতার ঐতিহ্য রয়েছে। বাংলার মানুষ ভদ্র সভ্য শিক্ষিত এই পরিচয় রয়েছে। কিন্তু যেভাবে ধীরে ধীরে এইসব সংগঠনগুলি বাংলাকে বাঙালি বনাম অবাঙালি একটা লড়াইতে লড়িয়ে দিচ্ছে এতে সেই ঐতিহ্যের দফারফা হয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় আবাঙালীদের বাঙালিদের প্রতি ভয়ানক ঘৃণা তৈরি হচ্ছে। বাংলার বাইরে প্রবাসী বাঙালিদের হেনস্থার শিকার হয়ে চলেছে। কিন্তু এটাই শেষ নয়, শেষটা আরও ভয়ঙ্কর। যেটা সদ্য দেখা যাচ্ছে। কোনো বাঙালি যদি নিজেদের আত্মসমালোচনা করেও কিছু বলেন বা লেখেন, তাঁকেও ভিলেন প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। রে রে করে তেড়ে যাচ্ছেন মানুষ। এবং সামাজিকভাবে কোণঠাসা করা হচ্ছে। এছাড়াও শারীরিক নিগ্রহতো এরা আগেই করেছে। এরফলে শুধু অবাঙালি নয়, যদি আপনিও কোনো হক কথা বলেন, তাহলেও কিন্তু এদের হাত থেকে নিস্তার নেই। এরা বাংলাকে একটা এমন অবস্থায় নিয়ে গিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে যেখানে বাঙালি বনাম অবাঙালি এবং লিবারাল হয়ে যাবে। সমস্ত ইস্যু গৌণ হয়ে রাজনৈতিক লড়াই হবে বাঙালি এবং অবাঙালি। কাল হয়ত বাঙালির কোনো নোংরামির প্রতিবাদ করলেন এরা সেটা গোটা বাঙালির অপমান বলে আপনাকে শত্রু বানিয়ে দিল। এই বিষয়টা অনেকেই মনে করেন অরাজনৈতিক, কিন্তু এটি অত্যন্ত সুক্ষ রাজনৈতিক ইস্যু। অত্যন্ত সুক্ষ ভাবে একটা দল, অন্য সব দলকে গৌণ করে, নিজেদের বাঙালির মসিহা এবং সব ইস্যু গৌণ করে বাঙালি বিপদে পড়েছে এরম অবস্থা তৈরি করতে চাইছে।

হেট পলিটিক্স অত্যন্ত শক্তিশালী এবং ভয়ংকর। বাংলার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী এই রাজনীতি খুব সুন্দর করতেন। ২০০৭-১১ বাংলায় যাই ঘটুক তার জন্য দায়ী সিপিএম, এরম একটা অবস্থা তৈরি করেছিলেন। এবং সেটা এমন অবস্থায় গিয়েছি ২০১১ তে লড়াইটা সিপিএম বনাম বাংলা হয়ে গিয়েছিল। কেন্দ্রের বর্তমান শাসক দল বিজেপিও খুব সুন্দর হেট পলিটিক্সের ধারক ও বাহক। দেশে সর্বদা হিন্দু খতরে মে হ্যায়, এবং ভোটের আগে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ব্যবহার করে এক শ্রেণীর মানুষকে অন্যশ্রেণীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দিয়ে ভোট বৈতরণী পর করতে সিদ্ধহস্ত। অন্যদিকে প্রতিবাদ করলেই রাজ্যে মাওবাদী আর কেন্দ্রে দেশদ্রোহী। এই হল হেট পলিটিক্সের সহজ সমীকরণ। আর ব্যাংকার তথাকথিত বাঙালির মসিহারাও এই অবস্থাই সৃষ্টি করতে চলেছে, ওদের প্রতিবাদ করলেই, ওদের ভুলকে ভুল বললেই আপনি বাঙালি বিরোধী। ফলে এই মুহূর্তে নিজেদের সংযত করতে না পারলে আগামী দিনে আপনি আমিও কিন্তু হয় বাংলার বাইরে হেনস্থার শিকার হব, নয়ত বাঙলাতেই বাঙালি বিরোধী তকমা নিয়ে হেনস্থা হতে বাধ্য হব।

Saturday, July 4, 2020

বিএড চতুর্থ সেমিস্টার সমস্ত বিষয়ের গাইড

July 04, 2020 1
বিএড চতুর্থ সেমিস্টার সমস্ত বিষয়ের গাইড
আমাদের পেজের প্রচুর ফলওয়ার্সরা বিএড এর চতুর্থ সেমের বই আপলোড করার কথা বলছিলেন। তাঁদের দাবি মতো বিএডের চতুর্থ সেমিস্টারের সমস্ত বিষয় নিয়ে একটি গাইড বুক আপলোড করা হল। বইটির কপিরাইট সংশ্লিষ্ট সংস্থার। শুধুমাত্র ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবে পিডিএফ করা হল। কোনো বাণিজ্যিক কারনে এই বইটি এই ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়নি।